Header Ads

Header ADS

HSC এর পরে কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়লে ভালো হয় ?

HSC এর পর খুবই যাচাই বাছাই করে দিক ঠিক করুন। আসলে কোনটা করলে আপনার জন্য ভালো? এই প্রশ্নের উত্তরের খোরাক জোগাতে আমি কিছু ব্যাপারে আলোকপাত করবো। আশা রাখি এই কথা গুলো আপনার সঠিক পথ নির্বাচনে সহায়তা করবে।

ভূমিকা

এই লেখা আপনার জন্য যারা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন কিন্তু চিন্তায় আছেন যে পড়াশুনা কি নিয়ে করবেন এবং এর ভবিষ্যৎ কি! আমি এই ধিধা কাটানোর যথাসম্ভব চেষ্টা করবো। এই লেখা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আমি লিখছি। ছেলে-মেয়ে উভয়ের কথা মনে রেখেই লিখছি। যে সময়য়েই আপনি এই লেখা পড়েন না কেন, যেন এই লেখা থেকে আপনার ক্যারিয়ার জীবনে সথাসম্ভব উপকার পান।

খুঁজে বের করুন কোনটা আপনার জন্য সঠিক

আমাদের স্টুডেন্ট সাধারনত তিন শ্রেণীর। সাইন্স, আর্টস এবং কমার্স। বাংলা, ইংরেজি মাধ্যম এবং মাদ্রাসার লাইনের  স্টুডেন্ট। তবে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জন্য এই লেখা সবার ক্ষেত্রেই কাজে দিবে।

উচ্চশিক্ষার দেয়ার জন্য দেশে প্রাইভেট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভাব নাই। অভাব নাই সাবজেক্টেরও। এমনও আছে যে কেউ সাইন্সে পড়ে কমার্সের সাবজেক্ট, কিংবা কমার্সের স্টুডেন্ট পরবর্তীতে সাইন্সের সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে পারবে।

বিবিএ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সাধারনত স্টুডেন্ট ভর্তি হয় বেশি। কিন্তু ফাকা পরে থাকে এমন অনেক বিষয় যার কথা বেশিরভাগ স্টুডেন্ট জানেই না। বিবিএ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাবজেক্ট গুলো যে ভালো তাতে কোন সন্ধেহ নেই এবং এগুলোর কাজের পরিসীমা অন্যান্য বিষয়ের থেকে তুলনামূলক বেশি। প্রতিটা সাবজেক্টই কোন না কোন ক্ষেত্রের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। তাই ঠিকমত সেই বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করলে ক্যারিয়ার নিয়ে কখনোই দুশ্চিন্তা করতে হবে না। অধুনিক যুগে মেধাবীরা কখনোই বেকার থাকে না।

আপনার আগ্রহ আছে এমন যত সাবজেক্ট আছে ওগুলো নিয়ে আগে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করুন। ঐ সাবজেক্ট এর কাজের ক্ষেত্র কি কি? অর্থাৎ পাশ করার পর আপনি কি ধরনের কাজ পাবেন/করতে পারবেন। সেই কাজের দাম কেমন? দেশে চাহিদা কেমন? বিগত বছরে কেমন চাহিদা ছিল...

শুধু প্রশ্ন করুন ইন্টারনেটে। প্রয়োজন হলে ইন্টারনেটে কিভাবে ভালো মত সার্চ করতে হয় সেটাও প্রশ্ন করুন। উত্তর পাবেন একাধিক। ওগুলো পড়ুন, ধীরে ধীরে আপনার নিজের মধ্যে একটা ধারনা তৈরি হবে। সেটা অন্যের সাথে শেয়ার এবং আলোচনা করুন।

অনলাইনে সাহায্যের অভাব নাই। কোথায় কিভাবে যেতে হয়, ফরম কিভাবে পাওয়া যায়, কিভাবে পূরণ করতে হয়, কোথায় জমা দিতে হয়... এমন কিছু নাই, যা অনলাইনে নাই। আপনার শুধু এখান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস টা খুঁজে বের করতে হবে। প্রশ্নে যত উপযুক্ত কি-ওয়ার্ড ব্যাবহার করতে পারবেন তত ভালো রেজাল্ট পাবেন।

আর প্রশ্ন এমন ভাবে করবেন না, যা শুধু আপনি দেখতে চান। অর্থাৎ আপনি যদি সার্চ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভালো দিক, রেজাল্ট পাবেন শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সব ভালো জিনিসের। কিন্তু আপনার তো প্রকৃত পক্ষে জানা উচিৎ সত্য টা, তাই না? তাই সার্চ করতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভালো এবং খারাপ দিক। তাহলেই সেরা রেজাল্ট টা পাবেন। কারন সার্চ ইঞ্জিলে আপনি যাই দেখতে চাবেন, সে আপনাকে তাই দেখাবে। কারন যেখানে ভর্তি হবেন তার পরিবেশ টাও আপনার অবগত হওয়া উচিৎ।

তাই প্রশ্ন শুধু করতে পারলেই হবে না, সেটা যথাযথও হতে হবে।


অনলাইন কোর্স

যে বিষয়েই আপনার আগ্রহ সেটা অনলাইনে কোর্স করুন। অনলাইন কোর্স করায় এমন সাইট অসংখ্য। কোন সাইটের নাম বললাম না। কারন ঠিক মত সার্চ করার প্রয়োজনীয়তা আগেই বলেছি।

নিজের স্কিল বৃদ্ধি করুন যত বেশি পারেন। ইন্টারনেটের যুগে তথ্যের অভাব নাই। কিন্তু সেখান থেকে ভালো জিনিস টা খুঁজে বের করাই কষ্টসাধ্য। প্রশ্ন করুন, এটা কেন জানতে হবে? এটা না জানলে কি এমন ক্ষতি হবে। নাকি জানলেই ক্ষতি বেশি, কারন এটা কোন কাজের জিনিস না। শুধুই সময় এবং শ্রমের অপচয়।

এই ব্যাপারে পড়তে পারেন - যা না জানলে ক্ষতি নাই এবং যা অবশ্যই জানা উচিৎ



আনুসাঙ্গিক বিষয়ঃ


যাতায়াত

অবশ্যই এমন কোন কোথাও ভর্তি হবেন না যেটা আপনার বাসস্থান থেকে অনেক সময়ের পথ। কারন আপনাকে সেখানে একটি দীর্ঘ সময় যাতায়াত করতে হবে। আপনি সময় পাবেন ২৪ ঘণ্টা। সেখানে বেশিরভাগ সময় যদি যাতায়াতেই চলে যায় সেটা লং টার্মে অনেক প্যারাদায়ক হবে।


খরচ

যেখানে পড়বেন সেটা শেষ করতে আনুমানিক কত খরচ হতে পারে। সে সামর্থ্য আপনার আছে কিনা। পড়াশুনার  মাঝপথে যাতায়াত কিংবা অর্থের কারনে বন্ধ হয়ে যাবে কিনা। ঐ বিষয়ে পড়ার জন্য এক্সট্রা কোন কিছু কিনতে হবে কিনা।

শিক্ষার মান

যেখানে ভর্তি হবেন তার মান কেমন? তারা কি আসলেই শিক্ষা প্রদান করে নাকি শিক্ষার নামে বেবসা প্রতিষ্ঠান। সেখানে পড়ে এমন একাধিক স্টুডেন্টের সাথে আলাপ আলোচনা করুন। প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস যাচাই করুন।


আপনার পরবর্তী প্রজন্মের জন্যঃ

এইচএসসি এর পর পড়াশোনা নিয়ে আপনি চিন্তিত অর্থাৎ ছোটবেলায় লক্ষ্য ঠিক না করেই আমাদের দৌড় শুরু হয়। সাধারণত এমনটাই হয়। বাবা-মা/অভিবাবক আমাদের স্কুলে ভর্তি করান, আপনি সাইন্স না কমার্সে পড়বেন সেটাও তাদের ইচ্ছায় হয়। এভাবে আমাদের জীবনের অনেক কিছুতে তাদের একটা প্রভাব বিস্তার থাকে। ফলে দেখা যায় অন্যজনের ইচ্ছার প্রাধান্য দিতে গিয়ে নিজের অনেক স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে হচ্ছে।

কিন্তু নিজের যে একটা স্বপ্ন আছে সেটা বুঝতে বুঝতে দেখা যায় কারো জীবনের আঠারো বছর শেষ। কিন্তু যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিকমত একটা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা যায় তাহলে অন্তত সেখান থেকে জীবনকে গুছিয়ে নেওয়া যায়। কাজ পারলে, সেটা যেকোনো কাজ, সেই লোক বেকার থাকে না।

অভিবাবকেরা আমাদের ভালো চান, তাতে কোন সন্ধেহ নেই। কিন্তু অনেক সময় তাদের কাছে যেটা ভালো মনে হয়, বাস্তবে সেটা সেরকম ভালো নাও হতে পারে। কারন সময় বদলায়, কিন্তু জ্ঞানগত সীমাবদ্ধতার কারনে অনেক মানুষের'ই চিন্তা ভাবনা বদলায় না। আগে যার অনেক চাহিদা ছিল, বর্তমানে হয়তো সেটা নাই, আবার ভবিষ্যতেও একই রকম থাকবে না। আপনার আস্থা রাখতে হবে পরিসংখ্যানের উপর। ডাটা কি তথ্য দিচ্ছে সেটা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ডিসিশন নিতে হবে নিজ গুনে, ডেটা শুধু আপনাকে সঠিক সিদ্ধন্ত নিতে সাহায্য করবে।

কারন আপনি জানেন আসলে আপনার নিজের অবস্থা কি।

তাই নিজেরা যখন অভিবাবক হবেন, সন্তানের জন্য বিচার বিবেচনা করে উপযুক্ত শিক্ষা নির্বাচন করবেন। যাতে ছোট বেলা থেকেই সে জানতে পারে সে বড় হয়ে কি হবে। সেভাবেই তার পড়াশুনা, চর্চা হবে।




উপসংহার

ফ্যামিলি কে প্রাধান্য দিন। এরাই আপনার সবচেয়ে আপনজন। এমন কিছুর আশা করবেন না, যা আপনার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব না।

কাজ শিখুন। অর্থ উপার্জন করতে হবে এই কথা মাথায় রাখুন এবং সেটা যত দ্রুত সম্ভব। অন্তত নিজের পকেট খরচ নিজের উপার্জনের টাকায় চালাল। এমন কিছু কইরেন না যা বাস্তব সম্মত না। আপনার দেশ এবং পরিবেশের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, বাস্তবতা গ্রহন করতে শিখুন। পরিবারের সাথে আলোচনা করুন। অবশ্যই যুক্তি সহকারে। আপনি যা পড়তে চান সেটা যে আসলেই আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো সেটা তাদের বুঝিয়ে বলুন।

আপনি কাজ পারলে কখনোই বেকার থাকবেন না। অসাধারন কিছু করতে চাইলে আপনাকে বেতিক্রম হতে হবে। পড়তে হবে, চর্চা করতে হবে। কিন্তু চিন্তা করা, বা কিছু চর্চা করার ধৈর্য বেশিরভাগেরই থাকে না। আপনি জানেন আপনার ভবিষ্যৎ কি। কারন যা শিখতেছেন তার ভ্যালু আপনি জানেন। যদি আপনি ঠিক ভাবে নিজের পেছনে সময় দেন, তার ফল আপনি পাবেন। তবে আপনি যে কাজ পারেন সেটা অন্যদের জানাইতেও যে হবে সেটা ভুলে জাইয়েন না। এই জন্য নিজের কাজ শেয়ার করতে হবে যখন সেটা উপযুক্ত হবে।

আমাদের সমস্যা হল আমরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে ফেলি কিন্তু কোন বাস্তবমুখি কাজ পারি না। কারন পাশ করাটাই যদি মুখ্য হয়, সেটা আপনাকে চরম ভোগাবে। আজীবন বেকার থাকবেন অথবা টুকটাক একটা চাকুরী নিয়ে কোনমতে টিকে থাকবেন... তাই যাই করেন তার সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ জেনে কইরেন। শুধু কেউ খারাপ বা ভালো বললেই তার পেছনে ছুইটেন না।





3 comments:

Powered by Blogger.